প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি
বর্তমান ভোলা জেলাটি মূলতঃ একটি দ্বীপ। পূর্বে এটি বৃহৎ বরিশাল জেলার একটি মহকুমা ছিল। এ জেলায় বেশ কয়জন জ্ঞানী-গুণী জন্মগ্রহণ করেন। তবে ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানের সেবক হিসেবে এ জেলায় হাকীম আবদুল লতিফ সাহেব ছিলেন অন্যতম।
সম্ভবতঃ বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে তিনি ভোলা থানার অন্তর্গত পাতাবুনিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত ছুফী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শাহ ছুফী নোয়াব আলী পণ্ডিত এই অঞ্চলের একজন সু-পরিচিত আলেম ছিলেন।
হাকীম আবদুল লতিফ প্রাথমিক শিক্ষা নিজ গ্রামেই শেষ করেন। অতঃপর ভোলা যুগির ঘোলে জৈনপুরের প্রখ্যাত পীরে কামেল হযরত মাওলানা হাফেজ আবদুর রব জৈনপুরী (রঃ) এর নামানুসারে তাদেরই দেয়া স্থানে ইসলামিয়া আবদুর রব সিনিয়র মাদ্রাসা হতে আলিম এবং ভোলা দারুল হাদীছ আলীয়া মাদ্রাসা হতে ফাজিল পাশ করে ধর্মীয় শিক্ষায় আরো উচ্চতর সনদ অর্জনের জন্য হিন্দুস্তান গমন করেন। তথা হতে দেশে এসে বেশ পরিণত বয়সে এল্মে তিব্ব অর্জনের জন্য ঢাকার তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৪১ সালে হাকীমে হাযেক সনদপ্রাপ্ত হয়ে নিজ জন্মস্থানে ফিরে যান। দেশ বিভাগের পর ভোলা শহরে হাবিবিয়া দাওয়াখানা নামে একটি দাওয়াখানা প্রতিষ্ঠা করে ইউনানী চিকিৎসা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। এ সময় চিকিৎসক হিসেবে তিনি বেশ নাম করেন। ইউনানী পাঠ্য জীবন শেষ করার পর হতেই তিনি আঞ্জুমানে আতিব্বার একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং নানা সময় ভোলা ও বরিশাল জেলার আঞ্জুমানের সভাপতি হন ও ইউনানী চিকিৎসার প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের সদস্য হন এবং মৃত্যুর পুর্বক্ষণ পর্যন্ত উক্ত পদে ছিলেন। ১৯৮২ সালে হাকীম আবদুল লতিফ ও তার বড় ছেলে ড. আতাউর রহমান প্রচেষ্টায় ভোলায় ইসলামিয়া ইউনানী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ইন্তেকালের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত উক্ত কলেজের প্রতিষ্ঠাতা-অধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর ইন্তেকালের পর বড় জামাতা হাকীম মাওলানা আবুল কালাম আজাদী উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করেন, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদী ইন্তেকালের পর মরহুম অধ্যক্ষ হাকীম আবদুল লতিফ সাহেবে কনিষ্ঠ ছেলে হাকীম মোঃ রাজিউর রহমান বর্তামানে অধ্যক্ষ।
বাংলাদেশ ইউনানীর এ একনিষ্ঠ সেবক ৯ই জুন, ১৯৯২ সালে ইন্তেকাল করেন। তাঁর বড় ছেলে হাকীম আতাউর রহমান ঢাকার সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ডিগ্রী কলেজের একজন প্রাক্তন প্রভাষক ছিলেন এবং পরবর্তিতে অধ্যক্ষ হওয়ার কয়েক বছর পর অবসর গ্রহন করেন। তাছাড়া তাঁর পরিবার ছেলে মেয়ে পরীবার বর্গের সকলকে হাকীমী পাশ করে সনদ অর্জন করিয়েছেন বর্তমানে তার পরিবারের অনেকেই কলেজের সাথে সংশ্লিষ্ঠতা আছে।